বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০০৯

শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়লো এন্টি এড নেটওয়ার্ক



বর্তমান সময়ে পৃথিবীর সাথে যোগাযোগের সবচে বড় মাধ্যম হচ্ছে অনলাইন। বিশ্বজুড়ে ঠিক কতগুলো ওয়েবসাইট আছে এর সঠিক পরিসংখ্যান বের করা আসলেই দুস্কর। একটি ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য রয়েছে বড় ধরনের খরচের ব্যাপার। তারপরও দিন দিনই এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তার কারনগুলোর মধ্য সবচে প্রথমে যেটিকে আমরা দেখি তা হচ্ছে, অধিকাংশ সাইটগুলো থেকেই তার পিছনে যে খরচ হয় তা সহ আরো বেশীকিছু উঠে আসে। অনলাইনে ব্যায়ের রাস্তার যেমন অভাব নেই তেমনি রয়েছে অসংখ্য আয়ের রাস্তাও। আর এই রাস্তাগুলোর বিরাট একটি অংশ জুড়ে আছে এড নেটওয়ার্ক।

এড নেটওয়ার্ক কী?
নির্দিষ্ট কোন ওয়েবসাইটে অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আয়ের রাস্তা রয়েছে একথা কমবেশী আমাদের সবারই জানা। বিজ্ঞাপনগুলো সাধারণতঃ দুইভাবে প্রদর্শন করানো হয়। প্রথমতঃ কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে। আর দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হচ্ছে নির্দিষ্ট একটি সংস্থা দুই পক্ষের মধ্যে সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে। দ্বিতীয় পদ্ধতিটিই হচ্ছে এড নেটওয়ার্ক। এড নেটওয়ার্ক সংস্থাগুলো তাদের গ্রাহকে দুইটি শ্রেণীতে বিভক্ত করে। তা হচ্ছে, এডভারটাইজার (বিজ্ঞাপন দাতা) এবং পাবলিশার (বিজ্ঞাপন প্রদর্শক)। এডভারটাইজার নির্দিষ্ট কিছু অর্থের বিনিময়ে উক্ত এড নেটওয়ার্কের কাছে তার বিজ্ঞাপন জমা দেন এবং এড নেটওয়ার্ক বিজ্ঞাপনের শ্রেণী অনুযায়ী পাবলিশারের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। যখন উক্ত পাবলিশারের সাইটের কোন পাঠক বিজ্ঞাপনটির উপর আকৃষ্ট হয়ে তাতে ক্লিক করেন তখন এড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে উক্ত পাবলিশারকে এ্যাডভারটাইজারের পক্ষ হতে কিছু পরিমাণ অর্থ প্রদান করা হয়। বর্তমানে এড নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে শক্ত অবস্থানে রয়েছে Google Adsense. এছাড়াও রয়েছে Adbrite, Yahoo Publisher Network, Amazon Associates ইত্যাদি ইত্যাদি।

এন্টি এড নেটওয়ার্ক
বিজ্ঞাপন থেকে যদিও আয় করা সম্ভব তবে এ কথা সত্যি যে একটি ভাল মানের ওয়েবসাইটের সৌন্দর্য বিজ্ঞাপনের কারনে অনেকটাই নষ্ট হয়। তাছাড়া অধিকাংশ পাঠকই বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণা পছন্দ করেন না। এর উপরে রয়েছে সাইটের ব্যন্ডউইডথ এর ব্যাপার। বিজ্ঞাপনের কারনে সাইটের ব্যান্ডউইডথ বেড়ে যায় এবং সাইটটির লোডিং টাইমও সেইসাথে বেড়ে যায়। তারপর রয়েছে এ্যাকাউন্ট বাতিল হবার ভয়। এ্যাড নেটওয়ার্কগুলো পান থেকে চুন খসলেই আপনার একাউন্টটি যখন তখন বন্ধ করে দেবে আর সেইসাথে হারাবেন আপনার সারা মাসের আয়ের সব টাকা। এসব নানাবিধ সমস্যার কথা মাথায় রেখেই Contenture নামক একটি সংস্থা চেষ্টা করেছিল একটি এন্টি এড নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার। এদের সিস্টেমটা হচ্ছে, কনটেনচার এর অধিনস্থ সাইটগুলোতে কোন প্রকার বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হবে না কিন্তু ঐ সাইটটির ভিজিটরকে একটি মাসিক বা বাৎসরিক চুক্তিতে পেমেন্ট করতে হবে সাইটের কন্টেন্টগুলো পড়ার জন্য।

শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়লে এন্টি এড নেটওয়ার্ক
কোনকিছু যখন ফ্রিতে পাওয়া যায় তখন কেন আপনি টাকা দিয়ে কিনবেন? একই ঘটনা ঘটেছে এখানেও। প্রথমত যে সাইটগুলো তথ্যবহুল নয় বা তথ্যবহুল হলেও এখনো জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি সেই সাইটগুলো পড়ার জন্য কেউ টাকা দেবে না। আর যে সাইটগুলো বর্তমানে জনপ্রিয়তার চূড়ায় অবস্থান করছে সেই সাইটগুলো এমনিতেই যথেষ্ট কামাচ্ছে। তারা যদি এখন এই পদ্ধতি গ্রহণ করে তবে তাদের জনপ্রিয়তা হারাবার যথেষ্ট ঝুকি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ- আমরা প্রত্যেকেই দিনে কতবার গুগলে সার্চ করি তার কোন হিসাব নেই। কিন্তু আগামীকাল যদি গুগল বলে সার্চ করতে হলে মাসে মাসে টাকা দিতে হবে আপনি কী সার্চ করবেন? আপনি করলেও আমি কিন্তু করবো না। কেননা তখনো অনেক সার্চ ইঞ্জিন পাচ্ছি যেখানে সার্চ করতে কোন পয়সা লাগবে না।

জানুয়ারীতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এন্টি এড নেটওয়ার্ক- কনটেনচার
আজ সকালে মনে হলো দেখে আসি এন্টি এড নেটওয়ার্ক (কনটেনচার) -এর কী খবর।

গিয়েই দেখি ৯ ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করা কনটেনচার এরই মধ্যে বুঝে গেছে তাদের এই পদ্ধতি কোন কাজে আসবে না। ফলে তারা ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে সাইটটি বন্ধ করে দেবার। আজই শেষ দিন কনটেনচারের কাছে যার যা পাওনা আছে তা বুঝে নেবার। আগামীকাল থেকে সাইটটি বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। আর এভাবেই মাত্র ২ সপ্তাহে মৃত্যু ঘটলো একটি এন্টি এড নেটওয়ার্ক এর।

0 টি মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন