সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০০৯

টরেন্টের স্পীড বাড়িয়ে নিন


আমরা যারা নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি তাদেরকে প্রায়ই এটা ওটা ডাউনলোড করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় জিনিসটাকে খুজে পেতে পোহাতে হয় নানা রকম ঝক্কি ঝামেলা। এক্ষেত্রে টরেন্ট একটি অন্যতম মাধ্যম যা আমাদের এ ঝামেলাকে অনেকাংশেই কমিয়ে দেয়।

টরেন্ট বিষয়ক সবচে বড় যে প্রশ্ন সেটি হচ্ছে এর স্পীড। টরেন্ট কি, কেন এবং কোথায় এ কথা বোধহয় এখন আর বলার প্রয়োজন নেই। এখানে এর স্পীড নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।

আপনার কাছে যদি কোন টরেন্ট ক্লায়েন্ট এ্যপ্লিকেশন না থাকে তবে Portable uTorrent Multi ডাউনলোড করে নিতে পারেন। ডাউনলোড করার পর এ্যপ্লিকেশনটি রান করুন এবং অপশন থেকে Preferences এ ক্লিক করুন অথবা Ctrl+P চাপুন। ফলে আপনার সামনে যে উইন্ডোটি আসবে সেখান থেকে Connection এর অন্তর্গত Bandwidth Limiting থেকে Global Maximum Upload Rate ডিফল্ট হিসেবে 0 অর্থাৎ আনলিমিটেড করা আছে সেটিকে পরিবর্তন করে 1 করে দিন।

ফলে আপনার টরেন্ট ক্লায়েন্ট প্রতি সেকেন্ডে 1 কিলোবাইটের বেশী আপলোড করবে না। এবার OK করে বেরিয়ে আসুন।

এবার অপশন থেকে Speed Guide সিলেক্ট করুন অথবা কিবোর্ড থেকে Ctrl+G চাপুন।


ফলে আপনার সামনে যে উইন্ডোটি আসবে সেখান থেকে Conection Type = xx/100Mbit (সর্বোচ্চ) করে দিন এবং Use Selected Setting এ ক্লিক করে বেরিয়ে আসুন।

এবার Half-open limit fix  সফটওয়্যারটি ডাউনলোট করে সফটওয়্যারটি রান করুন এবং New Limit এর ঘরে আপনার ইচ্ছামত সংখ্যা বাড়িয়ে দিন।

সংখ্যাটি আপনি 100 বা তার কমবেশী করতে পারেন। আমরা এটা করছি কেননা, উইন্ডোজ ডিফল্ট হিসেবে একসাথে দশটি কানেকশনের Data আদান প্রদান সাপোর্ট করে (লিনাক্সে এই সমস্যা নেই)। আমরা এ সংখ্যাটিকে একটু বাড়িয়ে নিলাম। এবার আপনার পিসি রিস্টার্ট দিন।

রিস্টার্ট হয়ে যাবার পর আপনি আপনার পছন্দের যে কোন টরেন্ট সার্চ ইঞ্জিন থেকে আপনার প্রয়োজনীয় টরেন্ট ফাইলটি ডাউনলোড করুন। পছন্দনীয় টরেন্ট সার্চ ইঞ্জিন/সাইট খুজে পেতে রংমহলের এই টপিকটি আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

আবার আপনাকে অবশ্যই ভাল টরেন্ট বাছাই করতে হবে। যেকোন টরেন্ট ডাউনলোড করার আগে এর সীড এবং পিয়ার'র অবস্থা দেখে নিন। এখানে প্রশ্ন আসতে পারে সীড এবং পিয়ার কী? এককথায় আমরা বলতে পারি Seed হচ্ছে প্রদানকারী এবং Peer হচ্ছে গ্রহণকারী। টরেন্ট থেকে আমরা যে ফাইলগুলো ডাউনলোড করি তা আসলে কোন সার্ভার থেকে নয়। মূলতঃ একটি ট্র্যাকার সার্ভারের উপরে ভর করে এক পিসি থেকে অন্য পিসিতে Data Transfer এর একটি প্রক্রিয়ার নাম Torrent. এজন্য Seed (শেয়ারকারী) এর সংখ্যা যত বেশী হবে ডাউনলোড স্পীডও স্বাভাবিকভাবেই তত বেশী হবে। এজন্য কোন টরেন্ট ফাইল ডাউনলোড করার সময় এমন একটি টরেন্ট ফাইল পছন্দ করুন যেটার সীড এবং পিয়ার এর সংখ্যা কাছাকাছি কেননা সীড এর তুলনায় পিয়ার যদি অনেক বেশী হয় তবে তা ডাউনলোডে ঝামেলা করে। আপনার পছন্দসই একটি টরেন্ট ফাইল ডাউনলোড করার পর আপনি আপনার টরেন্ট ক্লায়েন্টের সাহায্যে তা ওপেন করুন। uTorrent এর সাহায্যে ওপেন করলে তা এরকম দেখাবে।

১. যে ফাইলটি ডাউনলোড হচ্ছে তার নাম।
২. ফাইলটির সাইজ
৩. ফাইলটির কত শতাংশ (%) ডাউনলোড হয়েছে তার হিসাব
৪. সীড এর সংখ্যা = এ্যাকটিভ সীড (মোট সীডার)
৫. পিয়ার = এ্যাকটিভ পিয়ার (মোট পিয়ার)
৬. ডাউনলোড স্পীড
৭. আপলোড স্পীড

টরেন্ট থেকে কোন কিছু ট্রান্সফারের সময় কিছুটা Data লস হয় এটাকেই হ্যাশ বলে। এই লসটা বিভিন্নভাবে হয়ে থাকে যেমন- ডাউনলোড চলাকালীন সময়ে তা থামিয়ে দিলে, ইন্টারনেট কানেকশন স্পীড ইত্যাদি। আমরা জানি টরেন্ট থেকে ডাউনলোডকৃত ফাইলগুলো কোন না কোন পিসি থেকে ট্র্যাকার সার্ভারের মাধ্যমে আসে। কোন কারনে ডাউনলোড বাধাগ্রস্থ হলে উক্ত ফাইলটি সার্ভারে এসে একসময় হারিয়ে যায় কিন্তু টরেন্ট ক্লায়েন্ট আমাদেরকে দেখায় উক্ত ডাটাকে ডাউনলোড করা হয়েছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্যই মূলতঃ হ্যাশ চেক করা।

বর্তমান টরেন্ট ক্লায়েন্টগুলোতে এটা বিল্টইন ভাবেই দেয়া থাকে। আমরা চাইলে uTorrent এ টরেন্ট ফাইল অ্যাড করার সময়ই এটা ডিজেবল করে দিতে পারি নিচের চিহ্নিত স্থানে টিক চিহ্ন দিয়ে। ফলে আপনার ক্লায়েন্ট সফটি আপনার ডাউনলোডকৃত ফাইলের হ্যাশ চেক করবে না।


কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা করা ঠিক নয়। কেননা 1000 KB ডাউনলোড করতে গিয়ে কিছু অংশ মিসিং হতেই পারে। আপনার টরেন্ট ক্লায়েন্ট হ্যাশ চেক করে যখন দেখবে আপনার ফাইলের এই অংশটুকু আসেনি তখন সেটার জন্য আবার সার্ভারে রিকোয়েস্ট পাঠাবে। ফলে কষ্ট করে ডাউনলোড করা ফাইল করাপ্ট হবার সম্ভাবনা কম থাকে। তাছাড়া হ্যাশ চেক বন্ধ করলে যে ডাউনলোড স্পীড অনেক বেড়ে যায় তাও না। তাই আমার পরামর্শ আপনি হ্যাশ চেক বন্ধ করবেন না। আপনার কাঙ্খিত ফাইলটি ডাউনলোড হয়ে যাবার পর অবশ্যই ডাউনলোড লিস্ট থেকে উক্ত টরেন্টটি মুছে দিন। কেননা ডাউনলোড হয়ে যাবার পর স্ট্যাটাসে লক্ষ্য করুন Seeding লেখা দেখাচ্ছে অর্থাৎ আপনার এই ফাইলটি এখন অন্যদেরকে শেয়ার করা হচ্ছে। যার ফলে কানেকশন স্পীড কিছুটা স্লো হয়ে যায়।

আপনি যদি অপেরা ব্যবহারকারী হন তবে আপনি চাইলে সরাসরি অপেরার মাধ্যমেই টরেন্ট ডাউনলোড করতে পারবেন। কেননা অপেরাতে বিল্টইন বিটটরেন্ট ক্লায়েন্ট দেয়া আছে। অপেরা ফ্রি ডাউনলোড করতে পারবেন এখান থেকে

আপনি যদি ফায়ারফক্স ব্যবহারকারী হন তবে আপনি FireTorrent নামক এ্যাডঅনটি ব্যাবহার করে সরাসরি ফায়ারফক্স থেকেই টরেন্ট ডাউনলোড করতে পারবেন। Add-ons টি সেটআপ দেবার পর আপনার ফায়ারফক্সের Tools মেনু থেকে Add-ons থেকে Extensions থেকে FireTorrent এর অপশন এ ক্লিক করুন এবং Upoload Rate = 1 Kb/s করে দিন।

আমার পছন্দ SymTorrent. এটি একটি সিম্বিয়ান মোবাইল এ্যাপ্লিকেশন। মোবাইলেই টরেন্ট ডাউনলোড দিয়ে পকেটে রেখে দিই। নিজের মত ডাউনলোড হতে থাকে।

আপনি চাইলে এখান থেকে এ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করতে পারেন।
SymTorrent for S60 2nd Edition
SymTorrent for S60 3rd Edition

শেষের কথা
এখানে uTorrent 1.6 এর ডাউনলোড দেয়া হয়েছে বিধায় টিউটোরিয়ালটাও ওইটার উপরেই লেখা। তবে যারা uTorrent 1.85 ব্যবহার করছেন তারা উক্ত টিউটোরিয়ালে উল্লেখিত

এর স্থলে নিচের মত দেখতে পাবেন

চিত্রের মত করে কনফিগার করুন। বাকী সব একই। আর যারা 1.85 ডাউনলোড করতে চান তাদের জন্য µTorrent Stable (1.8.5)
µTorrent Beta  (2.0 build 17427) ও পাওয়া যাচ্ছে তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে বেটাতে বিশ্বাসী নই।

0 টি মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন